আব্দুল কুদ্দুস রানা,প্রথম আলো :: কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ৮মে বুধবার। প্রথম ধাপে দেশের ১৫০টি উপজেলার সঙ্গে এই সদর উপজেলারও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইভিএম পদ্ধতিতে।
নির্বাচনে লড়ছেন দুজন প্রার্থী। একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান (আনারস)। অপরজন কক্সবাজার পৌরসভার চারবারে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার (মোটরসাইকেল)।
কক্সবাজার পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমসহ দলের বেশ কিছু নেতা-কর্মী নুরুল আবছারের পক্ষে মাঠে নামায় দুই প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটকেন্দ্র দখল ও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা এবং দলীয় রেষারেষির কারণে ভোটের দিন দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।
প্রশাসনও উপজেলার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের মোট ৮২টি ভোটকেন্দ্রের সব কটিতে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর নিরাপত্তা নিচ্ছে।
গত সোমবার রাতে প্রচারণা শেষ করেছেন দুই প্রার্থী।
নুরুল আবছারের পক্ষে পথসভায় বক্তব্য দিয়েছেন মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী। ভোটারদের উদ্দেশ্যে মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, নুরুল আবছারকে জয়ী করার উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্নীতি, দখল-বাণিজ্য, লুটপাট ঠেকানো। আবছার নির্বাচিত হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।
নুরুল আবছার সব সময় ভোটারদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছেন। তাঁর দাবি, ৮০ শতাংশ ভোটার তাঁর পক্ষে আছেন।
অন্যদিকে নুরুল আবছারের দুর্নীতি মামলায় সাজাভোগের কথা ভোটারদের সামনে তুলে ধরে মুজিবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের আরও কিছু দুর্নীতিবাজ, দখলবাজ, বেইমান ও প্রভাবশালী নুরুল আবছারের পক্ষ নিয়েছেন, কক্সবাজারকে আরও লুটেপুটে খাওয়ার জন্য। সচেতন ভোটাররা এই ভুল আর করবেন না। তাঁর দাবি, ৯০ শতাংশ ভোটার তাঁর পক্ষে রয়েছেন।
শুরু থেকে মুজিবুর রহমানের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলামসহ দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও পাঁচটি ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
কক্সবাজার পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে সদর উপজেলার মোট ভোটারসংখ্যা ২ লাখ ২২ হাজার ৯৯৬। এর মধ্যে পৌরসভার ভোটার ৬৭ হাজার ৫৭৭। নুরুল আবছারের বাড়ি পৌরসভার টেকপাড়াতে, আর মুজিবুর রহমানের বাড়ি নতুন বাহারছড়ায়।
এদিকে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবদিয়াপাড়ার মুহিউচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা, সমিতিপাড়ায় ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার (কওমি মাদ্রাসা) কেন্দ্র, দক্ষিণ কুতুবদিয়াপাড়া ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ মাদ্রাসা, ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিমানবন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, এয়ারপোর্ট পাবলিক হাইস্কুল কেন্দ্র, সৈকত বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে অন্তত ১৭ হাজার ভোটার আছেন। সব কটি কেন্দ্র মুজিবুর রহমানের বাড়ির পাশে। এসব কেন্দ্রে নুরুল আবছারের পক্ষেও প্রভাব বিস্তারের শঙ্কা রয়েছে।
এ ছাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কস্তুরাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পেশকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ তিতুমীর ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের শঙ্কা রয়েছে।
কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুজ্জামান বলেন, সব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে পুলিশ-আনসারের পাশাপাশি কেন্দ্রের বাইরে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবে র্যাব-বিজিবি, পুলিশসহ একাধিক স্ট্রাইকিং ফোর্স। ভোটকেন্দ্র দখল বা গোলযোগ সৃষ্টির সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না।
Posted ২:০৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta